দখিনের খবর ডেস্ক ॥ মাসের শুরুর দিকে তাপপ্রবাহ থাকলেও তা কেটে গিয়ে বর্তমানে বেড়েছে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা। আগামী কয়েকদিন এই ধারা অব্যাহত থাকার পর আবার তা কমতে শুরু করবে। ফলে ঈদুল ফিতরের সময়টা দেশের কোথাও থাকবে রোদ, কোথাও থাকবে বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিস জানায়, বর্তমানে লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ এলাকায় অবস্থান করছে। তাই বেড়েছে বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও। দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পশ্চিমাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে দু’দিন ধরে কম বেশি বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এমনকী কোথাও কোথাও ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগেও কালবৈশাখী ঝড় হচ্ছে। আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুর রহমান জানান, বর্তমানে আবাহাওয়ার যে অবস্থা, এতে ১২ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে। ১৩ মে এই প্রবণতা কমবে। ১৪ মে থেকে থেমে থেমে বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হবে। ১৫ মে’র দিকে আরো কমে যাবে। এক্ষেত্রে ১৩, ১৪ ও ১৫ মে দেশের কোথাও কোথাও দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাত হবে। কোনো কোনো জায়গায় থাকবে রোদ। রোজা ২৯টি হলে ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে ১৩ মে এবং ৩০টি রোজা হলে ঈদ উদযাপন হবে ১৪ মে। এ মাসেই অন্তত একটি ঘূর্ণিঝড় এবং দুই থেকে তিনটি তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে। তবে ঈদের সময়টাতে কোনো সাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা নেই। তবে কালবৈশাখীর কারণে নদীবন্দরে সতর্কতা রয়েছে, সেটা কিছু কিছু এলাকায় অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসেরও শঙ্কা নেই। নেই তীব্র তাপপ্রবাহের কোনো আভাসও। চলতি মাসের শুরুর দিকে পঞ্চমবারের মতো তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এ মৌসুমে অন্য বছর এতবার তপপ্রবাহ হয় না। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে তাপপ্রবাহ বেড়েছে। কেননা, বাতাসের ম্যাকানিজমটা ছিল না। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এই সময় বৃষ্টিটা যে সিস্টেমে হয়, সেটাকে আমরা বলি পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব। মানে শক্তিশালী পশ্চিমা লঘুচাপ থাকতে হবে। নরমালি ডিসেম্বর থেকে এই এপ্রিল পর্যন্ত গড়ে ৫টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পশ্চিমা লঘুচাপ শক্তিশালী অবস্থানে (স্ট্রংলি ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স) থাকে। এই ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স (পশ্চিমা লঘুচাপ) আসে ভূমধ্যসাগর থেকে। তারপর সেটা ধীরে ধীরে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। তার সঙ্গে যদি আমাদের দক্ষিণী বাতাসের সংমিশ্রণ ঘটে অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর থেকে ময়েশ্চার ক্যারি করে, সেক্ষেত্রে বৃষ্টি হয়। এই সিস্টেমটা আসলে কয়েকদিন পরপর দুই থেকে চারদিন বৃষ্টি হয়। এবছর এ ধরনের ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স ছিল না। যেগুলো হয়েছে তা স্থানীয়ভাবে হয়েছে। এ কারণে হঠাৎ কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মাঝে মধ্যে এরকম হয়। পাঁচ-দশ বছর পরপর এটা হয়। প্রতি বছর তো একই রকম থাকবে না। তবে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব এখন কিছুটা রয়েছে। তাই বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
Leave a Reply